ডেস্ক রিপোর্ট: হজ নিবন্ধনের জন্য ছয় দফা সময় বাড়ালেও কোটা পূরণ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে আগামী বছর হজের খরচ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। যদিও হজের কয়েকমাস আগে সবার সঙ্গে আলোচনা করে হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয় রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ও সৌদি আরবের হারাম শরিফের নিকটবর্তী বিভিন্ন হোটেল ভেঙে ফেলায় এ বছর হোটেল ভাড়া নেয়ার সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে অধিক পরিমাণ অর্থে হোটেল ভাড়া করা হচ্ছে। সার্বিক বিবেচনায় বিভিন্ন কারণে এ বছরের হজ প্যাকেজকে হ্রাসকৃত প্যাকেজ হিসেবে ধরা যায়। সেই বিবেচনায় বলা যায় যে, আগামী বছরগুলোতেও হজ প্যাকেজের মূল্য আরও বৃদ্ধি পাবে। কারণ ভেঙ্গে ফেলা বাড়ি ও হোটেল আবার গড়ে তুলতে আরও ২/৩ বছর লাগবে। এমতাবস্থায়, এ বছরের ঘোষিত হজ প্যাকেজই সর্বনিম্ন হিসেবে বিবেচনা করা যায়। সেই বিবেচনায় হজযাত্রীদের এ বারের হজ প্যাকেজে নিবন্ধিত হওয়ার অনুরোধ করা হলো।
রোববার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সরকারিভাবে ৯ হাজার ৯৩৯ জন এবং বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজে যেতে এক লাখ ৮ হাজার ৪১৬ জন নিবন্ধন করেছেন। বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, হজের কোটা পূরণ করতেই কৌশলগতভাবে আগামী বছর হজের খরচ কেমন হতে পারে সেই বিষয়ে ধারণা দেয়া হয়েছে। হারাম শরীফের কাছে পুরনো বহু হোটেল ভেঙে ফেলায় এবার খরচ বেড়েছে। আগামীতে খরচ আরও বাড়বে।
গতবারের তুলনায় এবার রিয়ালের দাম ৩৩ শতাংশ বাড়ায় হজ প্যাকেজে ৬০-৬৩ হাজার টাকা খরচ বেড়েছে। তবে হজ ব্যবস্থাপনায় যাতে ত্রুটি না হয় সরকার সেই চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
আজ (২ এপ্রিল) রবিবার বিকালে সেগুন বাগিচার একটি হোটেলে ‘হজ প্যাকেজ-২০২৩ ও ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
রিলিজিয়াস রিপোর্টার্স ফোরাম (আরআরএফ) এই সেমিনারে আয়োজন করেন। রিলিজিয়াস রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি ওবায়দুল্লাহ বাদলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবলুর সঞ্চালনায় সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) এর সভাপতি এম. শাহাদাত হোসাইন তসলিম, মহাসচিব ফারুক আহমেদ সরদার। এ ছাড়াও ‘ঘোষিত হজ প্যাকেজ ও রেজিস্ট্রেশেনের চিত্র: কারণ ও অনুসন্ধান’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি রাশিদুল হাসান।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত বছর সৌদি আরবের মুদ্রা রিয়ালের দাম ছিলো ২১ টাকা। এবার রিয়ালের দাম বেড়ে হয়েছে ২৯ টাকা। যা গতবারের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেড়েছে। এবার হজ প্যাকেজে ৬০-৬৩ হাজার টাকা খরচ বেড়েছে শুধু রিয়ালের দাম বৃদ্ধির কারণে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, একটা বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি যে হজ যাত্রীদের পরিবহনের ক্ষেত্রে ডেডিকেটেড ফ্লাইট রাখা হয়। ওই বিমানে অন্য কোনো যাত্রী নিতে পারে না। ফলে ভাড়া অনেক বেশি পড়ে যায়। তবে আগামী বছর হজের আগে বিমান ভাড়া কীভাবে কমানো যায় সেটা নিয়ে সরকার চিন্তা ভাবনা করছে।
এম. শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, হজের খরচ নিয়ে মানুষের মাঝে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। বৈশ্বিক মন্দার কারণে এবছর মানুষ আর্থিক কষ্টের মধ্যে আছেন। অনেকেই ইচ্ছা থাকা স্বত্তেও এবার হজে যেতে পারছেন না। হজ প্যাকেজের মূল্য সৌদি আরব ও বাংলাদেশ অংশের খরচের সমন্বয়ে নির্ধারণ হয়। এর মধ্যে সৌদি আরবের খরচ সব দেশের হাজীদের জন্য এক। এটা বাড়ানো কমানোর সুযোগ নেই। তবে বাংলাদেশ অংশের খরচের মধ্যে বিমান ভাড়া তুলনামূলক বেশি ধরা হয়েছে বলে আমরা মনে করি।
Leave a Reply