আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফ্রিকার উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য চীন যে ঋণ দিচ্ছে তার কিছু বিষয়ে উদ্বিগ্ন বলে জানালেন বিশ্বব্যাংকের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস। তার মতে, ঋণের শর্তাবলী ‘আরো স্বচ্ছ’ হওয়া দরকার।
বর্তমানে ঘানা ও জাম্বিয়াসহ কয়েকটি দেশ বেইজিংয়ের ঋণ পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী ঋণ বিতরণের কথা জানিয়েছে বেইজিং।
সাধারণত অন্য দেশ বা বহুপক্ষীয় সংস্থা থেকে ধার নেয়া অর্থ অবকাঠামো, শিক্ষা ও কৃষির মতো খাতে বিনিয়োগ করে অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়াতে চায় উন্নয়নশীল দেশগুলো।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য প্রধান অর্থনীতিতে সুদের হারের তীব্র বৃদ্ধি ঋণ পরিশোধকে আরো ব্যয়বহুল করে তুলছে। কারণ ঋণ পরিশোধে প্রচুর পরিমাণ ডলার বা ইউরোর মতো বিদেশী মুদ্রা ব্যয় হয়। আবার আন্তর্জাতিক মুদ্রার সাপেক্ষে বেশির ভাগ স্থানীয় মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় ঋণ পরিশোধে অতিরিক্ত অর্থ খুঁজতে হচ্ছে।
ম্যালপাসের মতে, এটি একটি দ্বৈত ধাক্কা। যার অর্থ হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর হতে চলেছে।
এমন এক পরিস্থিতিতে আফ্রিকায় চীনের সঙ্গে নতুন করে প্রতিযোগিতায় নেমেছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি সপ্তাহে মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস তিনটি দেশ সফর করেন। তিনি তানজানিয়া ও ঘানার আর্থিক সহায়তার বড় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেখানকার খনি অবকাঠামোতেও দেখা গেছে তাকে।
এ অঞ্চলে বিশ্বের দুটি বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে প্রতিযোগিতাকে ‘উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সম্ভবত স্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বর্ণনা করছেন ডেভিড ম্যালপাস। কারণ এটি বিকল্প তৈরি করছে।
এই অংশগ্রহণকে দৃঢ়ভাবে উৎসাহিত করলেও দেশগুলোর মধ্যে চুক্তিতে স্বচ্ছতা আনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। চুক্তি করে যদি বলা হয় কাউকে দেখানো যাবে না, একে সমস্যা হিসেবে দেখেন। পাশাপাশি জামানত বিষয়ে আফ্রিকার দেশগুলোকে সতর্ক করেছেন ম্যালপাস। এর কারণে প্রজন্মের পর প্রজন্ম অন্য কোনো একটি দেশের আবদ্ধ হয়ে থাকে। যা চীনের সঙ্গে ঘটছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উন্নয়নশীল অর্থনীতির ঋণের সবচেয়ে বড় উৎস হয়ে উঠেছে বেইজিং। কিয়েল ইনস্টিটিউটের নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৬ থেকে ২০২২ সালে ২২টি দেশকে বেলআউটে সাড়ে ১৮ হাজার কোটি ডলার ধার দিয়েছে চীন।
তবে চীন বলছে, দেশগুলোর অভিপ্রায়কে সম্মান করে তারা ঋণ দিয়েছে। কখনোই ধার করতে বা অর্থ পরিশোধে বাধ্য করেনি। আর ঋণ চুক্তিতে কোনো রাজনৈতিক অভিপ্রায় থাকে না দেশটির।
তবে ম্যালপাসের মতে, এ সমস্যাগুলো শুধু চীনার অর্থায়নে নয়, তবে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
তিনি বলেন, আপনি যদি পশ্চিমা ঋণের ইতিহাসের দেখেন, কখনো কখনো দেশগুলোর জনগণের জন্য পুরোপুরি ঋণ দেয়া হয়নি। এমনকি বিশ্বব্যাংকের ঋণও সবসময় একটি দেশের জন্য সর্বোত্তম নয়। তাই প্রত্যেকের উচিত ঋণের মান উন্নত করা।
Leave a Reply