কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় সদ্য প্রবাস ফেরত এক যুবক তার মাকে প্রকাশ্যে শাবল দিয়ে পিটিয়ে ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। মাকে হত্যার আগে ওই প্রবাসী যুবক তার বাবা, মামা-মামী, মামাত বোন ও ভাইসহ পরিবারের ৫ সদস্যকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই প্রবাসী যুবককে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের কনকশ্রী গ্রামের দক্ষিণ পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এদিন সন্ধ্যায় পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে বলে জানান লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আইয়ূব।
নিহত ওই নারীর নাম নুরজাহান বেগম ওরফে চশমা (৫০)। তিনি ওই গ্রামের রাজা মিয়ার স্ত্রী। তাদের সন্তান অভিযুক্ত ওই যুবকের নাম নূরে আলম ওরফে সবুজ (৩২)।
নিহত নুরজাহান বেগমের ছোট ছেলে আসাদ জানায়, মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় গত সোমবার তার ভাই সবুজ সৌদি থেকে দেশে আসেন। এরপর থেকে তিনি চুপচাপ থাকতেন। কেউ কথা বলতে চাইলে গালাগালি করতেন।
আসাদ বলেন, শনিবার দুপুর ১টার দিকে হাতে একটি কাঠের টুকরো নিয়ে আমাদের দক্ষিণ পাশের নানার বাড়িতে যান সবুজ ভাই। এরপর কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই কাঠ দিয়ে পিটিয়ে আমাদের বাবা, মামা তাজুল ইসলাম, আরেক মামা কামরুল ইসলামের স্ত্রী প্রীতি আক্তার, তাঁর মেয়ে ৮ বছরের মাইশা আক্তার তাহাকে পিটিয়ে আহত করে।
ঘটনার সময় আমি পাশের বাড়িতে ছিলাম। চিৎকার শুনে ছুটে এসে সবুজ ভাইকে শান্ত করার চেষ্টা করলে তিনি আমাকেও পিটিয়ে আহত করেন। এক পর্যায়ে তিনি বাড়িতে গিয়ে শাবল হাতে নিয়ে ফের বের হন। তার এই অবস্থা দেকে মা পেছন পেছন এসে সবুজ ভাইকে ঘরে ফিরে যেতে বলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি মায়ের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে শাবল দিয়ে পেটাতে থাকেন। শাবলের আঘাতে মায়ের মাথা ফেটে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। ঘটনাস্থল মায়ের রক্তে ভেসে যায়।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সাইদুল ইসলাম বলেন, সবুজ তার মাকে হত্যা করে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলো। তখন গ্রামের মানুষ তাকে আটক করে আমাকে বিষয়টি জানায়। এরপর আমি পুলিশকে খবর দেই। তারা এসে লাশ উদ্ধারসহ সবুজকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
গত শনিবার সন্ধ্যায় লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আইয়ূব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। রবিবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তি পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের কেউ এখনো থানায় মামলা দায়ের করেনি।
Leave a Reply