আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজা উপত্যকায় পুনরায় হামলা শুরু করেছে ইসরাইল। এতে গত তিন দিনে সাত শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। যার ৭০ শতাংশই নারী এবং শিশু। ইসরাইলের এই অতর্কিত হামলায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠলেও এতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
এখানে বলে রাখা ভালো ক্ষমতায় আসার আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট শপথ নিয়েই গাজা যুদ্ধ বন্ধ করে দেবেন। তবে শপথগ্রহণের দুই মাস যেতে না যেতেই ট্রাম্পের সুর পাল্টে গেছে। গাজায় ক্রমাগত নারী-শিশু নির্বিশেষে নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধির মধ্যেই তেল আবিবের প্রতি ট্রাম্পের পূর্ণাঙ্গ সমর্থনের কথা জানালো হোয়াইট হাউস।এমন তথ্য প্রকাশ করেছে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লিভিট। গাজায় তেল আবিবের পূর্ণমাত্রার হামলার জন্য হামাসকে দায়ী করেছেন ওই নারী। বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তিনি চান সকল জিম্মি ঘরে ফিরে আসুক।
এছাড়া ইসরাইল এবং আইডিএফ (ইসরাইল প্রতিরক্ষা বাহিনী) সম্প্রতি যে পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে ট্রাম্প পূর্ণাঙ্গ সমর্থন জানিয়েছেন বলেও যোগ করেন লিভিট। হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরাইলের ভয়াবহ হামলায় গত তিন দিনে সাত শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার রাতে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে তেল আবিব। যুদ্ধবিমান থেকে একের এক বোমা ফেলে হত্যা করেছে ফিলিস্তিনি নারী, শিশু এবং বেসামরিক মানুষদের। টানা ১৮ মাস যুদ্ধের পর এ বছরের জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় হামাস ও ইসরাইল। শুরু থেকেই ওই যুদ্ধবিরতিকে ভঙ্গুর করে রেখেছে নেতানিয়াহু। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি শেষে দ্বিতীয় পর্যায় শুরু করার আলোচনার মধ্যেই পুনরায় হামলা চালিয়েছে তার বাহিনী। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে শুরু হওয়া যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৫০ হাজারের কাছাকাছি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
আহত হয়েছেন লাখেরও ওপর। তবে এই সংখ্যা আরও বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা লাশের সংখ্যা এতে যোগ করা হয়নি। গাজায় চলমান এই হত্যাযজ্ঞকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। এর জেরে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আইসিসি।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ইসরায়েলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর যুদ্ধ বিরতি চলাকালীন সময়ে ঘরে ফেরা ঘুমন্ত ফিলিস্তিনের মানুষের ওপর যুদ্ধ বিরতির লঙ্ঘন করে এই হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পেতে পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন।
Leave a Reply