চমেক হোস্টেলের ৪ ছাত্রকে শিবির সন্দেহে রাতভর নির্যাতন ছাত্রলীগের - মুক্ত আকাশ
    শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ০৫:৪১ অপরাহ্ন
    শিরোনাম:
    চট্টগ্রামে যুবদল-ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ২ জন গুলিবিদ্ধ, ওসি প্রত্যাহার চট্টগ্রামে বন্য হাতির আক্রমণে শিশুর মৃত্যু, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া একসঙ্গে চলতে পারে: মির্জা ফখরুল লেবার পার্টি ও খেলাফত মজলিসের সঙ্গে কমিশনের বৈঠক চলছে নির্বাচন পিছিয়ে যাবে, অনিশ্চয়তা তৈরি হবে এমন কোন শঙ্কা নেই আ,লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না বলে হুঁশিয়ারি জামায়াতের আ,লীগকে রাজনীতিতে ফেরাতে একাধিক রাজনৈতিক দল তৎপর আ,লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা কোন অপরাধের সাথে জড়িত নয়,তাদের রাজনীতিতে বাধা নেই গাজায় ইসরায়েলি হামলার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের হিথ্রো বিমানবন্দরের কাছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

    চমেক হোস্টেলের ৪ ছাত্রকে শিবির সন্দেহে রাতভর নির্যাতন ছাত্রলীগের

    • Update Time : শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
    • ৪৩ Time View

    ডেস্ক রিপোর্টঃ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৪ শিক্ষার্থীকে শিবির আখ্যা দিয়ে হোস্টেলের রুম থেকে ডেকে নিয়ে রাতভর নির্যাতন করেছে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এদের মধ্যে দুইজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এই ঘটনায় জড়িতরা এর আগে বিভিন্ন সময়ে মারামারিতে জড়িয়ে বহিষ্কৃত ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী বলে পরিচিত।

    বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসের রুম থেকে এই মেডিকেল শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নির্যাতন করা হয়।
    নির্যাতনের শিকার চার শিক্ষার্থী হলেন- জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল, সাকিব হোসেন, এম এ রায়হান, মোবাশ্বির হোসেন শুভ্র। তারা সবাই ৬২তম ব্যাচের ছাত্র। এদের মধ্যে জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল এবং সাকিব হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

    জানা যায়, ক্যাম্পাসে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা বলে পরিচিত অভিজিৎ দাশ, রিয়াজুল জয়, জাকির হোসেন সায়াল, মাহিন আহমেদ ও ইব্রাহিম সাকিবের নেতৃত্বেই এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এদের মধ্যে অভিজিৎ ও  জয় দুজনই ক্যাম্পাসে মারামারির ঘটনায় আড়াই বছরের জন্য বহিষ্কৃত। তবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তারা  হোস্টেল ও ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন।

    জানা যায়, বুধবার রাত প্রায় একটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের  প্রধান হোস্টেলের বি ব্লকের ৮বি নাম্বার রুম থেকে এম এ রাইয়ান ও  মোবাশ্বির আহমেদ শুভ্রকে এবং সি ব্লকের ৩ সি নাম্বার রুম থেকে জাহিদ হোসেন ওয়াকিল ও সাকিব হোসেনকে অতর্কিতভাবে ডেকে নিয়ে যায়  ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন সায়াল, ইব্রাহীম সাকিব, মাহিন আহমেদ, জুলফিকার মোহাম্মদ শোয়েব। তারপর তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় রিয়াজুল ইসলাম জয় ও অভিজিৎ দাশ  (যাদের বহিষ্কারাদেশ এখনো বহাল আছে) এর টর্চার সেলে। রাতভর সেখানে তাদের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের পর সকালবেলা হাসপাতালে না নিয়ে মোবাইল কেড়ে নিয়ে রুমে আটকে রাখা হয়।

    কোন সাধারণ শিক্ষার্থী যেন তাদেরকে হাসপাতালে নিতে না পারে সেজন্য তারা রুমের সামনে শিফট করে সারাক্ষণ পাহারাও দেয়। পরবর্তীতে নির্যাতিত এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক কলেজের অধ্যক্ষকে ফোনে বিষয়টি জানান। পরে অধ্যক্ষ পুলিশকে অবহিত করলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চকবাজার থানার পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে। এদের মধ্যে জাহিদ হোসেন ওয়াকিল ও সাকিব হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে সেখানেও হামলার আশংকায় তাদেরকে পাশের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তারা এই হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। আর ভুক্তভোগী  বাকি দুই শিক্ষার্থীকে প্রাইমারি চিকিৎসাও না দিয়ে জোর করে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন নির্যাতনকারীরা।

    ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে  জানান, বুধবার রাত ১টার দিকে প্রধান হোস্টেলের রুম থেকে ছাত্রলীগের  নাম ব্যবহারকারী কয়েকজন ছেলে আমাদেরকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের নামে অবর্ণনীয় নির্যাতন করে। তখনই আমার পরিবার থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়। তবে তারা প্রথমে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। পরে সন্ধ্যায় পুলিশ আর অধ্যক্ষ ম্যাডাম এসে আমাদের দুইজনকে উদ্ধার করে। বাকি দুইজনকে এই নির্যাতনকারীরা জোর করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। তাদেরকে কোন চিকিৎসাও দেয়া হয়নি।

    ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের মঞ্জুর সংবাদ মাধ্যমেকে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমাদেরকে অবহিত করে। পরে আমাদের ফোর্স গিয়ে দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে। এই বিষয়ে শিক্ষার্থী বা তাদের অভিভাবকরা থানায় কোন অভিযোগ দায়ের করেননি। কাউকে আটকও করা হয়নি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, শিক্ষার্থীদের পরিবারের অভিযাগের ভিত্তিতে আমরা পুলিশ নিয়ে দুইজনকে উদ্ধার করেছি। বাকি দুইজন আগেভাগে বাড়ি চলে গেছে। এই দুই শিক্ষার্থী আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়।

    Please Share This Post in Your Social Media

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    More News Of This Category
    © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
    ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: CloudVai-ক্লাউড ভাই