আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ওভাল অফিসে তাঁর উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় গোটা বিশ্বে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই জেলেনস্কিকে সমর্থন জানিয়ে ইউরোপের বহু দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা বার্তা দিয়েছিলেন। সেই জেলেনস্কি গতকাল ব্রিটেনে গিয়ে পৌঁছান। সেখানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
স্টারমার বুকে জড়িয়ে ধরেন জেলেনস্কিকে। বলেন, ‘গোটা ব্রিটেন ইউক্রেনের পাশে রয়েছে। যতদিনই লাগুক (শান্তি ফেরাতে) না কেন, ইউক্রেনের পাশে থাকব আমরা।
এদিকে ব্রিটেনের থেকে ২.২৬ বিলিয়ন পাউন্ডের ঋণ পেয়েছে ইউক্রেন। সেই ঋণ পেয়ে জেলেনস্কি বলেন, এই অর্থের সাহায্যে ইউক্রেনেই অস্ত্র তৈরির কাজ সম্ভব হবে। এদিকে ব্রিটেন জানিয়েছে, রাশিয়ার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে যে লাভ হয়েছিল, তা থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ দেওয়ার কথা ছিল জি৭ দেশগুলির। সেই প্যাকেজের অন্তর্গত এই ঋণ দেওয়া হয়েছে কিয়েভকে।
উল্লেখ্য, আমেরিকাও এই জি৭ গোষ্ঠীতে রয়েছে। এদিকে এই ঋণ পেয়ে জেলেনস্কি বলেন, ‘ব্রিটেনের মতো এমন পার্টনার এবং বন্ধু পেয়ে আমরা গর্বিত। যুদ্ধের শুরু থেকেই আমাদের সমর্থন করার জনাতে ব্রিটিশদের ধন্যবাদ জানাতে চাই।’ এদিকে আজ ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করার কথা জেলেনস্কির।
এর আগে ওভাল অফিসে বসেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের সামনে সুর চড়িয়ে কথা বলেন ইউক্রেনের রাষ্ট্রপ্রধান। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রীতিমতে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয় ভলোদিমির জেলেনস্কির। উল্লেখ্য, ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে বৈঠকে মুখোমুখি হয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেই বৈঠকেই উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয় দু’জনের।
এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন বাতিল হয়ে যায়। এদিকে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যে চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, তাতেও সই করেননি ট্রাম্প ও জেলেনস্কি। সেই বৈঠকের পরে এক বিবৃতি জারি করে ট্রাম্প আবার দাবি করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অপমান করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
উল্লেখ্য, ইউক্রেন যুদ্ধে প্রথম থেকেই ওয়াশিংটন ডিসি-কে পাশে পেয়েছিলেন জেলেনস্কি। তবে বিগত বছরগুলিতে মার্কিন মসনদে ছিলেন ডেমোক্র্যাট জো বাইডেন। ২০২৫ সালের ২০ ডিসেম্বর থেকে সেই সব বদলে যায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব নেন ট্রাম্প। এবং তিনি ইউক্রেনের বদলে রাশিয়ার দিকে ঝুঁকতে থাকেন।
এমনকী একটা সময়ে জেলেনস্কিকে ‘একনায়ক’ আখ্যা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ট্রাম্প এও ইঙ্গিত করেছিলেন যে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্যে আদতে জেলেনস্কি দায়ী। এই আবহে ইউক্রেন থেকে মার্কিনি সাহায্যের অর্থ ফেরত চেয়েছিলেন। আগামীতে ইউক্রেনকে সাহায্য করবেন না বলেও জানিয়ে দেন ট্রাম্প।
এরই মধ্যে পূর্ব ইউরোপে শান্তি ফেরাতে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসেছিল আমেরিকা। যদিও সেই আলোচনায় ঠাঁই পায়নি ইউক্রেন। এত কিছুর মাঝেই ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউজে মুখোমুখি হন ট্রাম্প এবং জেলেনস্কি। সেই সাক্ষাতের দিকে নজর ছিল গোটা বিশ্বের। এদিকে ওভাল অফিসের ঘটনার পরই ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়ে ইউরোপের বহু দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা বার্তা দেন জেলেনস্কিকে। এই আবহে ব্রিটেন সফরে পৌঁছান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পেতে পেজে লাইক দিয়ে আমার সাথে থাকুন।
Leave a Reply