বাংলাদেশের মানুষ নানান ঘটনার সুখ দুঃখ ও কষ্টের মধ্যে পার করে এলো ২০২২ সালের আরও একটি বছর। নতুন বছর ২০২৩ সাল নামে সম্ভাবনার হাতছানি নিয়ে হাজির হয়েছে নতুন একটি বছর। প্রভাতের প্রথম সুর্যোদয়ের মধ্যদিয়ে জনজীবনে উঁকি দিবে নতুন সময়, নতুন দিন। পুরাতনকে পেছনে ফেলে নব উদ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে শুরু হচ্ছে ইংরেজি নতুন বছর ২০২৩ সাল। নানা কারণে বিদায়ী বছরটি ছিল ঘটনাবহুল। করোনা ভাইরাসের মহামারিকাল পেরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার বছরটি মানুষের জন্য স্বস্তি নিয়ে হাজির হয়েছিল। কিন্তু রাজনীতি আর অর্থনীতির জন্য ছিল অনেকটা দুঃসময়। করোনার ধকল কাটাতে লড়াইয়ে থাকা অর্থনীতির জন্য নতুন এক ঝক্কি হয়ে হাজির হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ডলারের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক দাম এবং রিজার্ভ ক্ষয়ের কারণে দেশের অর্থনীতি বহুমুখী সংকটে পড়ে। এই প্রভাব কাটাতে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, আমদানি কমানো এবং ব্যাপক লোডশেডিং বড় ধরনের প্রভাব ফেলে জনজীবনে।
অর্থনীতির বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন বছরে অর্থনীতিতে নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে যোগ হবে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ। এই চাপ সামাল দিতে রপ্তানি বাড়াতে হবে, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে রাজস্ব আহরণ জোরদার করতে হবে সরকারকে। একইসঙ্গে নতুন কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে।
বিদায়ী বছরে মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় দুর্ভোগ হয়ে এসেছিল বাড়তি দ্রব্যমূল্য। প্রতিটি নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক দামের কারণে জীবন- জীবিকায় মারাত্মক প্রভাব পড়ে। সংকট সামাল দিতে জ্বালানির দাম বাড়ানোয় এর প্রভাবও পড়ে দ্রব্যমূল্যে। আয় না বাড়লেও নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ভারসাম্য হারিয়ে অনেক মানুষ নিদারুণ কষ্টে সময় কাটিয়েছেন। প্রায় সব পণ্যের দাম বাড়ায় বিদায়ী বছরে মূল্যস্ফীতি দুই অংকের ঘরে দাঁড়ায়। যদিও মূল্যস্ফীতির এই হিসাবটা যথা সময়ে জানা যায়নি। মূল্যস্ফীতির চাপে চিঁড়ে-চ্যাপ্টা জনজীবনে এখনও স্বস্তি ফিরেনি। দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে সরকার কিছু উদ্যোগ নিয়েও এর প্রভাব খুব একটা পড়েনি বাজারে। বরং নানা অজুহাতে দাম বাড়ানোর অশুভ প্রতিযোগিতা থেমে নেই এখনও। এমন অবস্থায় নির্বাচনের আগে নতুন বছরে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং দ্রব্যমূল্য মানুষের জন্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা সরকারের জন্য এক বড় চালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।
Leave a Reply