নাপা সিরাপ খেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই সহোদর শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠার পর সারা দেশে একটি নির্দিষ্ট ব্যাচে প্রস্তুত ঔষধটির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর জেলার সকল ঔষধের দোকানকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নাপা সিরাপ ও নাপা ড্রপ বিক্রি বন্ধ রাখার জন্য এক বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ জানায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি।
বাংলাদেশের বড় ঔষধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি প্যারাসিটামলের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড নাপা। এই ব্র্যান্ডের সাসপেনশন বা সিরাপ শিশুদের জ্বর বা ব্যথায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
বাংলাদেশে ভেজাল ঔষধ খেয়ে শিশু মৃত্যুর একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছিল ২০০৯ সালে। সেবার বিভিন্ন হাসপাতালে প্যারাসিটামল সিরাপ পান করে অন্তত ২৮টি শিশুর মৃত্যু হয়।
কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এই মৃত্যুর ঘটনাটি ঠিক কী কারণে ঘটেছে তা এখনো স্পষ্ট নয়।
শিশু দুটির মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনাটি এখন ব্যাপকভাবে তদন্ত করছে কয়েকটি তদন্ত কমিটি।
জানা যায়, আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে দুই শিশু মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে।
মৃত শিশু দুটির মায়ের বরাত দিয়ে জেলার সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, “কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিল বলে স্থানীয় একটি দোকান থেকে তাদের নাপা সিরাপ এনে খাওয়ানো হয়েছিল। বিকেলে পাঁচটার দিকে দুজনকে একই সাথে একই বোতল থেকে এই সিরাপ খাওয়ানো হয়। এর কিছুক্ষণ পরই দুজনেই বমি করতে শুরু করে। রাত নটা থেকে দশটা একঘণ্টার মধ্যে সাত ও পাঁচ বছর বয়সী শিশু দুটি মারা গেছে।”
অসুস্থ হলে শিশু দুটিকে প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান শেষে শিশু দুটিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সেখান থেকে শিশু দুটিকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
সিভিল সার্জন মি. উল্লাহ জানাচ্ছেন, বাড়িতেই শিশু দুটির মৃত্যু হয়।
কিন্তু জেনারেল হাসপাতাল থেকে কেন শিশু দুটিকে বাড়িতে পাঠানো হলো? তাদের কী চিকিৎসা সেখানে দেয়া হয়েছিল? এই প্রশ্নের জবাব এখনো মিলছে না।
সিভিল সার্জন বলছেন, তারা এ ব্যাপারে তদন্ত করছেন এখন।
মৃত শিশু দুটির বাবা একটি ইট ভাটার শ্রমিক। শিশুদের মধ্যে বড় ভাই স্থানীয় একটি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
Leave a Reply