বিশ্বকাপ ফুটবল ৩-০ গোলে স্বপ্নের ফাইনালে আর্জেন্টিনা - মুক্ত আকাশ
    শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ০৬:০৫ অপরাহ্ন
    শিরোনাম:
    চট্টগ্রামে যুবদল-ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ২ জন গুলিবিদ্ধ, ওসি প্রত্যাহার চট্টগ্রামে বন্য হাতির আক্রমণে শিশুর মৃত্যু, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া একসঙ্গে চলতে পারে: মির্জা ফখরুল লেবার পার্টি ও খেলাফত মজলিসের সঙ্গে কমিশনের বৈঠক চলছে নির্বাচন পিছিয়ে যাবে, অনিশ্চয়তা তৈরি হবে এমন কোন শঙ্কা নেই আ,লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না বলে হুঁশিয়ারি জামায়াতের আ,লীগকে রাজনীতিতে ফেরাতে একাধিক রাজনৈতিক দল তৎপর আ,লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা কোন অপরাধের সাথে জড়িত নয়,তাদের রাজনীতিতে বাধা নেই গাজায় ইসরায়েলি হামলার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের হিথ্রো বিমানবন্দরের কাছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

    বিশ্বকাপ ফুটবল ৩-০ গোলে স্বপ্নের ফাইনালে আর্জেন্টিনা

    • Update Time : মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২
    • ৩৯ Time View

    ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল খোলায় ফাইনালে উঠার লড়াইে ৩-০ গোলে
    স্বপ্নের ফাইনালে আর্জেন্টিনার জাতীয় ফুটবল দল। সুইডিশ সুপারস্টার ইব্রাহিমোভিচ একদিন আগেই যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তা কি সফল হতে চলেছে? তিনি বলেছিলেন, এবারের বিশ্বকাপ মেসির জন্য খোদাই করা আছে। বাস্তবে তাই হতে চলেছে। সৌদি আরবের সঙ্গে হারের পর মেসিরা অনেকটা ছিটকে পড়েছিলেন। তখন অনেকেই বলেছিলেন, মেসি এবারো শূন্য হাতে ফিরবেন। কিন্তু এরপর আর্জেন্টিনা ঘুরে দাঁড়ায়। একের পর এক স্বপ্ন দেখাতে শুরু করে। সেমিফাইনালের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলায় ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে মেসি ট্রফি জয়ের দ্বারপ্রান্তে। প্রথম গোলটি অবশ্য মেসি দিলেন নিজেই। এবারও পেনাল্টিতে।

    এরপর দুটো গোল করলেন হুলিয়ান আলভারেজ। তার প্রথম গোলটা ছিল দর্শনীয়। প্রতিপক্ষ দলের তিন প্লেয়ারকে কাটিয়ে সোজা পৌঁছে যান গোলে। গোলরক্ষক তার গতি রোধ করতে পারেননি। দ্বিতীয় গোলের সুযোগ তৈরি করেন লিওনেল মেসি। যেভাবে তিনি বল কাটিয়ে গোলের দিকে ছুটছিলেন তাতে মনে হয়েছিল- বলটি জালে পৌঁছে দেবেন। কিন্তু ক্রোয়েশিয়ানরা বাধা সৃষ্টি করতে গেলে মেসি খুব দ্রুততার সঙ্গে নিপুণ কাটব্যাক করেন আলভারেজের কাছে। এরপর আলভারেজ দ্রুত বলটি জালে পাঠিয়ে দেন। খেলার ভাগ্য অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়। জার্মান সুপারস্টার লোথার ম্যাথিউস বিশ্বকাপে ২৫ ম্যাচ খেলেছেন। মেসি কাল তার রেকর্ডে পৌঁছে গেলেন। ২০০৬ থেকে ২০২২ পর্যন্ত পাঁচ বিশ্বকাপে মেসি ২৫ ম্যাচ খেলেন। একইসঙ্গে বিশ্বকাপে ১১ গোল করে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার রেকর্ডও ভেঙে দিলেন আর্জেন্টাইন এই মহাতারকা।

    ২০১৪ সালের পর আরও একবার উঠে গেল বিশ্বকাপের ফাইনালে। এটি আর্জেন্টিনার ষষ্ঠ বিশ্বকাপ ফাইনাল। সেই সঙ্গে রাশিয়া বিশ্বকাপে ৩-০ গোলে হারের প্রতিশোধও নিলো দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। অন্যদিকে গতবারের ফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়ার পথচলা এবার থেমে গেছে শেষ চারেই। শেষ হয়ে গেছে বিশ্বকাপে মদরিচ অধ্যায়ও। আজ ফ্রান্স মরক্কোর সেমিফাইনালের বিজয়ীর সঙ্গে আগামী রোববার এই লুসাইল স্টেডিয়ামে শিরোপার লড়াইয়ে নামবে আর্জেন্টিনা।

    ১৯৯৪ থেকে ২০০২- তিন বিশ্বকাপে ১২ ম্যাচ খেলে ১০ গোল করেছিলেন বাতিস্তুতা। কোয়ার্টার-ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে একটি গোল করে তার পাশে বসেন মেসি। পরে উত্তরসূরিকে অভিনন্দন জানিয়ে বাতিস্তুতা বলেছিলেন, তিনি চান সেমিফাইনালেই তাকে ছাড়িয়ে যাক মেসি। তার সেই চাওয়া পূর্ণ করলেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। কাল সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে পেনাল্টি গোলে বাতিস্তুতাকে পেছনে ফেলেন মেসি। চলতি আসরে ৬ ম্যাচে মেসির গোল হলো ৫টি। আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে এখন ৩৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। এই নিয়ে পঞ্চম বিশ্বকাপে খেলা মেসির ১১ গোল হলো ২৫ ম্যাচ খেলে। এ দিন বিশ্বকাপে জার্মান গ্রেট লোথার ম্যাথিউসের সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড স্পর্শ করেন তিনি। ফাইনালে মাঠে নামলে এই রেকর্ড এককভাবে নিজের দখলে নিবেন এই মহাতারকা। লুসাইল স্টেডিয়ামে আগের ম্যাচে হলুদ কার্ডের নিষেধাজ্ঞায় থাকা আকুনার জায়গায় আর্জেন্টিনার একাদশে ঢোকেন তালিয়াফিকো। এছাড়াও ফরমেশনের কারণে লিসান্দ্রো মার্টিনেজের পরিবর্তে দলে পারেদেসকে শুরু করান স্কালোনি। এদিন শুরু থেকেই দুদল আক্রমণকে পাখির চোখ করে। শুরুতে অবশ্য আর্জেন্টিনার চেয়ে ক্রোয়েশিয়ার পায়েই বল ছিল বেশি। প্রথমার্ধে তাদের দখলে বল ছিল ৬২ শতাংশ। দারুণ সব পাসে তাদের প্লে–মেকিংগুলোও ছিল দেখার মতো। তবে আগের ম্যাচগুলোর মতো এ ম্যাচেও অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে ব্যর্থ হচ্ছিল ক্রোয়াটদের আক্রমণ। তাই পাস ও বল দখলে এগিয়ে থাকলেও নিশ্চিত গোলের সুযোগ বলতে যা বোঝায় তা বের করতে ব্যর্থ হয় ক্রোয়েশিয়া। পজেশন রেখে আক্রমণে ওঠার কৌশলেই সবসময় দেখা যায় আর্জেন্টিনাকে। একটু একটু করে গুছিয়ে ওঠা আর্জেন্টিনা ২৫তম মিনিটে ম্যাচে প্রথম উল্লেখযোগ্য সুযোগটি পায়। তবে এনজো ফার্নান্দেজের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক ডোমিনিক লিভাকোভিচ। নকআউট পর্বের প্রথম দুই ধাপে দলের জয়ের নায়ক লিভাকোভিচ সাত মিনিট পর করে ফেলেন মস্তবড় ভুল। মাঝমাঠ থেকে উড়ে আসা বল বক্সের মুখে বুক দিয়ে আলতো করে সামনে বাড়ান আলভারেজ। ঠিক ওই সময় ছুটে এসে তাকে ফাউল করে বসেন ক্রোয়াট গোলরক্ষক। পেনাল্টির বাঁশি বাজাতে দ্বিতীয়বার ভাবতে হয়নি রেফারিকে। গোলরক্ষককে দেখান হলুদ কার্ডও। বুলেট গতির স্পট কিকে ঠিকানা খুঁজে নেন মেসি। এবারের বিশ্বকাপে তার গোল হলো ৫টি। গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে আগে থেকে শীর্ষে থাকা কিলিয়ান এমবাপ্পের পাশে বসলেন তিনি। ক্যারিয়ারে মেসির মোট গোল হলো ৯৬টি। এগিয়ে গিয়ে যেন খুঁজে ফেরা আত্মবিশ্বাস ফিরে পায় আর্জেন্টিনা। বাড়াতে থাকে চাপ। পাঁচ মিনিট পরেই মিলে যায় দ্বিতীয় গোল। মেসির পাস পেয়ে মাঝমাঠের আগে থেকে দৌড় দেন আলভারেজ। সব বাধা পেরিয়ে বক্সের মুখে অবশ্য হারাতে বসেছিলেন পজেশন, তবে প্রতিপক্ষের পায়ে লেগে ফেরা বল দারুণ এক টোকায় সামনে বাড়ান। ওখানেও দলকে বাঁচানোর সুযোগ ছিল ডিফেন্ডার সোসার সামনে; কিন্তু তার দুর্বল শটে বল লাগে আলভারেজের বুকে। এরপর ঠাণ্ডা মাথায় ডান পায়ের শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ম্যানচেস্টার সিটির ফরোয়ার্ড। ম্যাচের ৬৯তম মিনিটে আরও এক গোল করেন আলভারেজ। তবে গোলটি তার থেকে অনেক বেশি কৃতিত্ব মেসির। ডান প্রান্তে সাইড লাইনের কাছে বল ধরে ডিফেন্ডারকে ঘাড়ের কাছে নিয়ে এগিয়ে যান মেসি। পায়ের কাজ দেখাতে দেখাতে বক্সে ঢোকেন। তার পরে বল রাখেন অরক্ষিত আলভারেজের কাছে। ডান পায়ে গোল করে ব্যবধান বাড়ান আলভারেজ। আলভারেজের আগের গোলটা যদি টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা গোল হয়, মেসির এই কীর্তিটি সম্ভবত টুর্নামেন্টের সেরা অ্যাসিস্ট। এরপর আর ক্রোয়েশিয়া এই ম্যাচে ফিরতে পারে নাকি! এই জয়ে ২০১৪ সালের পর আবারও বিশ্বকাপের ফাইনালের আর্জেন্টিনা।

    Please Share This Post in Your Social Media

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    More News Of This Category
    © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
    ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: CloudVai-ক্লাউড ভাই