ডেস্ক রিপোর্ট: লক্ষ্মীপুরে ইটভাটায় স্বামীকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে শারীরিক নির্যাতন ও স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একসময় ধর্ষণকারীরা ওই নারীর ডান হাতে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে বিভিন্ন ভাবে শারীরিক নির্যাতন চালায়।
ঘটনার পর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল পেয়ে সদর থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর চররমনী গ্রামের বনফুল ব্রিক্স অ্যান্ড কোম্পানিতে (বিবিসি) অভিযান চালায়।
নির্যাতিত স্বামী ভোলা জেলার বাসিন্দা ও তার স্ত্রী বাগেরহাট জেলার মেয়ে। তাদের সংসারে আড়াই বছরের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। তারা চট্টগ্রাম আজিমপাড়ায় ছিলেন। প্রায় ৩ মাস আগে ইটভাটাতে শ্রমিক হিসেবে কাজের উদ্দেশ্যে তারা লক্ষ্মীপুরের উত্তর চররমনী গ্রামের বিবিসি ইটভাটাতে আসে। ইটভাটার পাশেই তারা একটি ঘরভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন।
নির্যাতিতা নারী জানান তার স্বামী চট্টগ্রামে আজিমপাড়া এলাকায় দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। দূর সম্পর্কের একজনের সঙ্গে ৩ মাস আগে তিনি লক্ষ্মীপুরে ইটভাটায় কাজ করতে আসেন।
মঙ্গলবার ইটভাটায় আসলে জামাল মাঝি, নিজাম মাঝি ও দিনাজ তার কাছে ওই লোকটির সন্ধান চায়। এতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা তার স্বামীকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। দীর্ঘসময় ধরে ঘরে না ফেরায় স্বামীকে খুঁজতে ইটভাটায় যান তিনি। এরপর তার স্বামীর কাছে টাকা পাবে বলে জানায় ইটভাটা কর্তৃপক্ষ। টাকা পেলেই তাকে ছেড়ে দেয়া হবে বলে জানায়।
এ ছাড়া টাকা না দিতে পারলে তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য কুপ্রস্তাব দেয়া হয়। পরে তিনি বাসায় চলে যান। এরপর গভীর রাতে জামাল মাঝি, নিজাম মাঝি ও দিনাজ ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে। এরপর আরও ৬ জন গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে তারাই তার ডান হাতে সিগারেটের আগুন লাগিয়ে ছ্যাকা দেয়।
নির্যাতিতা নারী বলেন, আমরা অগ্রীম কোনো টাকা নিইনি। তবুও তারা আমার স্বামীকে বেঁধে রেখে নির্যাতন করেছে। আমি ছাড়াতে গেলে তারা আমাকে ধর্ষণ করে। নিরুপায় হয়ে ৯৯৯-এ কল দিয়ে ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘটনাটি পুলিশকে জানাই। তারা ঘটনাস্থল পৌঁছে আমার স্বামীকে বাঁধা অবস্থায় পেয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন জানান, ভুক্তভোগী নারীর কাছ থেকে ঘটনাটি শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply