আদালতের নির্দেশনার পরেও গণসংহতি আন্দোলনকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন না দেয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে বলে জানান জোনায়েদ সাকির আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। তিনি বলেন, গণসংহতি আন্দোলনকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেয়ার বিষয়ে হাইকোর্টের রায় ও নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এই আইনজীবী আরও বলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সময়ে ঘটা বিষয়টি নিয়ে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হলেও এখন নতুন সিইসি আসায় আদালত অবমাননার রুলটি কাজী হাবিবুল আউয়ালের বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে। এর আগে এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ১১ই এপ্রিল হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে গণসংহতি আন্দোলনকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তখন সিইসি ছিলেন কে এম নূরুল হুদা।
বর্তমান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি ও নতুন ৪ কমিশনার গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি শপথ নেন। হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত ১০ই ফেব্রুয়ারি গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি আদালত অবমাননার আবেদনটি করেন। এই আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে এই রুল দেয়া হয়।
‘গণসংহতি আন্দোলন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন চেয়ে ২০১৭ সালের ২৮শে ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এক পত্রের মাধ্যমে নিবন্ধন করা যাবে না মর্মে তাদের অবহিত করে। পরবর্তীতে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষে দলটির প্রধান সমন্বয়ক মো. জোনায়েদ সাকি হাইকোর্টে রিট করেন। এই রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৯ সালের ১১ই এপ্রিল রুল মঞ্জুর করে রায় দেন। সেই রায় ও আদেশের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে নিবন্ধন প্রদানের আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে রায় ও আদেশের সত্যায়িত অনুলিপি যথাসময়ে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হয় এবং আদালত থেকেও নিয়ম অনুযায়ী রায় ও আদেশের অনুলিপি প্রেরণ করা হয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
Leave a Reply