আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরাইল দাবি করেছিল যে তারা হিজবুল্লাহকে পিছু হটতে বাধ্য করেছে। কিন্তু হিজবুল্লাহ সম্প্রতি মাত্র কয়েক মিটারের ব্যবধানে দুটি সামরিক অভিযান চালিয়ে ইহুদিবাদী বসতি স্থাপনকারীদের কাছে প্রমাণ করেছে যে ইসরায়েলের কর্মকর্তারা তাদেরকে মিথ্যা বলছে এবং হিজবুল্লাহ ইসরাইলি সৈন্যদের মাথার খুলির মাত্র কয়েক মিটারের মধ্যেই অবস্থান করছে।
বেশিরভাগ পর্যবেক্ষক মনে করেন, লেবাননের সাথে সম্ভাব্য যুদ্ধের বিষয়টি নেতানিয়াহুর উপর নির্ভর করছে, তবে এ মুহূর্তে তিনি সংকটে রয়েছেন এবং একাধিক ফ্রন্টে অনেক চাপের মধ্যে আছেন। এরই মধ্যে ইয়েমেন তার হামলার চতুর্থ ধাপ শুরু করেছে এবং ভূমধ্যসাগরে ইসরাইলের স্বার্থকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। তারা আমেরিকান এবং ব্রিটিশ সামরিক জাহাজ ধ্বংস করে চলেছে এবং নৌ জোট ইয়েমেনিদের থামাতে সক্ষম হয়নি। ইয়েমেনি ফ্রন্ট একের পর এক হামলা চালিয়ে ইসরাইলের ইলাত বন্দর পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে এবং এখন ভূমধ্যসাগরকে লক্ষ্যবস্তু করছে।
গাজা ফ্রন্টে ইসরাইলের ক্ষয়ক্ষতিও বেশ অনেক এবং আরও অনেক ইসরাইলি সৈন্য ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে বন্দী হয়েছে। অন্যদিকে লেবানন ফ্রন্টে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় নেতানিয়াহু সরকারের পদত্যাগ এবং নতুন করে নির্বাচনের দাবিতে ইসরাইলের অভ্যন্তরে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ইসরাইলি নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে পারে এমন সম্ভাবনা ক্রমেই জোরদার হওয়ায় নেতানিয়াহু বেশ চাপের মধ্যে আছে। এর পাশাপাশি, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ হয়ে গেলে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক জীবনের অবসান ঘটবে এবং তাকে কারাগারে যেতে হবে। এই অবস্থায় এমন আশঙ্কা রয়েছে যে, সম্ভাব্য বিপদ এড়ানোর জন্য নেতানিয়াহু লেবাননে হামলা চালিয়ে বসতে পারে।
যদিও ইসরাইল দাবি করেছিল যে, তারা হিজবুল্লাহকে পিছু হটতে বাধ্য করেছে, কিন্তু হিজবুল্লাহ ইহুদিবাদী বসতি স্থাপনকারীদের কাছে প্রমাণ করেছে যে তাদের সরকার তাদেরকে মিথ্যা বলছে এবং তারা পিছু হটেনি।
প্রকৃতপক্ষে, আমরা যখন প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ভিডিওগুলো বিশ্লেষণ করি এবং তাদের ব্যবহৃত অস্ত্রের ধরণ সম্পর্কে জানতে পারি,তখন আমরা দেখতে পাই যে এই অস্ত্রগুলো ক্লাসিক এবং পুরানো অস্ত্র যেমন বি-সেভেন মডেলের মর্টার, পিকাসিয়ার মেশিনগান, কালাশনিকভ এবং কামান। এ থেকে বোঝা যায় যে এই অস্ত্রগুলো দিয়েও ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব এবং ইসরাইলের সামরিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস ও তাদের সৈন্যদের বন্দী করাও সম্ভব। লেবাননের জেনারেলরা দখলদার ইসরাইলকে জানিয়ে দিয়েছে যে, যদি তারা লেবাননে আক্রমণ করে তাহলে প্রতিরোধ যোদ্ধারা তাদেরকে এর আগের যুদ্ধে ইসরাইল যখন পরাজিতত হয়েছিল ঠিক সেই অবস্থায় নিয়ে যাবে এবং তাদের সামরিক ঘাঁটিগুলোতে বড় ধরনের হামলা চালানো হবে।
লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধা হিজবুল্লাহ সম্প্রতি ইসরাইলের দ্বিতীয় অত্যাধুনিক হার্মিস ৯০০ ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে। এর মাধ্যমে হিজবুল্লাহ ইসরাইলকে এটা বুঝিয়ে দিয়েছে যে তারা ৩০ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়ন্ত হার্মিস ড্রোনকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে এবং এইভাবে তারা ইসরাইলি এফ-১৬, এফ-১৫ এবং এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানকেও অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট দিয়ে ভূপাতিত করতে পারবে।
পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ সংবাদটি পেতে ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন।
Leave a Reply