শরীফ হায়দার শিবলু: চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানাধীন দুইটি ওয়ার্ড ১৩, ও ১৪ নং ওয়ার্ডে বিগত আ,লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বিএনপি নেতাকর্মীদের জন্য মুর্তিমান এক আতঙ্কের নাম হচ্ছে পুলিশের এসআই খাজা এনাম!
বিগত আ,লীগ সরকারের আমলে ছাত্রলীগের কোটায় চাকুরি পাওয়া পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর, (এস আই) খাজা এনাম এলাহী নগরীর খুলশী থানায় যোগদান করার পর থেকে খুলশী থানার দুই ওয়ার্ডের বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে শুরু হয় এনাম আতঙ্ক!
এনামের চোখে বিএনপি সমর্থন করে বা বিএনপির নেতা এমন তথ্য আসলে শুরু হয় এনামের বিএনপি নিধনের মিশন!
খাজা এনাম বিএনপি নেতাকর্মীদের মিথ্যা গায়েবি মামলা থেকে শুরু করে ডাকাতি প্রস্তুতি ও মাদক অথবা চিনতাই মামলা দিয়ে চালান করে দিতেন জেল হাজতে।
বিগত আ,লীগ সরকারের আমলে খাজা এনাম এলাহী খুলশী থানায় যোগদান করার পর পুলিশের পোশাকে এতোটাই বেপরোয়া হয় উঠে তার মতের বিরুদ্ধে গেলে আ,লীগের প্রভাব খাটিয়ে পুলিশ সদস্যদেরকে মিথ্যা অভিযোগে খুলশী থানা থেকে বদলি করিয়ে দিতেন খাজা এনাম।
নিরীহ পুলিশ সদস্যরাও এনামের ভয়ে মুখ খোলার সাহস পেত না, কারন এনাম নিজেকে চট্টগ্রাম মহানগর আ,লীগ নেতা সবেক সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দীনের আশীর্বাদে পুলিশের চাকরি পেয়েছে ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা হিসাবে নিজেকে পরিচয় দিতেন।
এনাম খুলশী থানায় যোগদানের পর খাজা এনামের দায়িত্ব পড়ে খুলশী থানার অধীনস্থ পাহাড়তলী পুলিশ ফাঁড়িতে ইনচার্জ হিসাবে।
এরপরই শুরু হয় এনামের বেপরোয়া চাঁদাবাজি কিশোর গ্যাং সদস্যদের দিয়ে মাদক ব্যাবসা সহ রেল অঙ্গনের বিভিন্ন কারখানায় চুরির মহা উৎসম্ব!
আবার কেউ এনামের অপকর্মের বিরুদ্ধে এসব তথ্য কোথায় প্রচার করলে তার উপর এনাম বিএনপি নেতাকর্মী ট্যাগ দিয়ে অথবা চোর ডাকাতের সদস্য বা মাদক ব্যাবসায়ী সেজে কারাভোগের পরিনতি ভোগ করতে হয়।
এনাম স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের হুমকির সুরে বলে দিতো যে, বিএনপি শুনলে সে-নাকি ১৪ হাত মাটির নিচ থেকে বের করে নিয়ে আসবে!
খুলশী থানা এলাকায় বিএনপির কোন নেতাকর্মীর নাম শুনলে সে ১৩ নং ওয়ার্ডে ফাড়ির দায়িত্ব থাকলেও থানার উর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ ছাড়াই ১৪ নং লালখান বাজার এলাকায় গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করতো।
এনাম খুলশী থানায় যোগদানের পর ১৩ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডে ছাত্রলীগ যুবলীগ ও কিশোর গ্যাং সদস্যদের অভিভাবক হয়ে উঠেন!
রেল এলাকায় জাযগা দখল, রেলওয়ে এলাকার বিভিন্ন কারখানায় চুরি, জুয়ার আসর, মাদক ব্যাবসা সহ সব ধরনের অপরাধ অপকর্ম চলতো এনামের নির্দেশে।
এবং খুলশী থানায় দায়িত্বে থাকা অবস্থায় বিগত দিনে মাদক সেবন করে খাজা এনাম খুলশী থানার নালাপাড়া, ঝাউতলা, কেন্টিন গেইট, বিজিএমইএ এলাকায় সাধারণ মানুষ হাতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছে /৫ থেকে ৬ বার।
অন্যদিকে আ,লীগের টার্গেটে পড়া কোন বিএনপির নেতাকর্মীকে যেকোনো মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর পর স্থানীয় ছাত্রলীগ যুবলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে আনন্দ উৎসবে লিপ্ত হতো পুলিশের এসআই খাজা এনাম।
সর্বশেষ গত ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল রাতে এনামের নিয়ন্ত্রণে চলা আমবাগান এলাকার মাদক ব্যাবসায়ী আলমগীর ও স্থানীয় যুবলীগ ও কিশোর গ্যাং লিডার বাঙালি বাবু স্থানীয় উপর হামলা করে।
হামলার পর স্থাীয়রা ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশের সহোযোগিতা চাইলে থানা থেকে ও ফাড়ি থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে মাদক ব্যাবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে স্থানীয়দের ধাওয়া করে।
এনামের এসব অপকর্মের কথা স্থানীরা গণমাধ্যম কর্মীদের জানালে গণমাধ্যম কর্মীরা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবগত করলে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে এনাম তার সাথে থাকা পুলিশের সোর্স ও কিশোর গ্যাং লিডার বাঙালি বাবুকে আটক করতে বাধ্য হয়।
ঐদিনের ঘটনায় গণমাধ্যম কর্মীরা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের ১৩ নং ওয়ার্ডের ২ টি মাদক স্পষ্ট চলার পিছনে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ খাজা এনামের হাত রয়েছে এমন প্রশ্ন করলে তৎকালীন সিএমপির উপ- পুলিশ কমিশনার মোখলেছুর রহমান তদন্ত সাপেক্ষে দোষী পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়ার কথা বলে তদন্তে মাদক সহ সংগঠিত হওয়া বিভিন্ন অপরাধে এনামের সম্পৃক্ততা পেয়ে এনামের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে আ,লীগ নেতা আজম নাছিরের নির্দেশে খুলশী থানা থেকে বন্দর থানায় বদলি করে দেওয়া হয়।
ছাত্রলীগের এই ক্যাডার পুলিশের এসআই খাজা এনাম এলাহীর বিরুদ্ধে ৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার গনঅভ্যুত্থানের পর শাস্তি মুলুক ব্যাবস্থা না নিয়ে উল্টো এনামকে পদোন্নতি দিয়ে নগরীর ডবলমুরিং থানায় সেকেন্ড অফিসার হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার পর পুনরায় শুরু হয়েছে এনামের গ্রেফতার বানিজ্য!
এনাম ছাত্রলীগের সাথে জড়িত এমন প্রশ্ন কেউ করলে এনাম জোর গলায় বলে তার শ্বশুর বিএনপি নেতা, তাকে কেউ কিছু করার ক্ষমতা নেই।
উল্লেখ্য,পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার আমলে সিএমপিতে ছাত্রলীগের কোটায় চাকুরি পাওয়া পুলিশের এসআই পদমর্যাদার যেসব অফিসার গত বছর ২৮ শে অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশে হামলার পর ২৪ সালের অবৈধ নির্বাচন নির্বিঘ্নে করতে আ,লীগ সরকারকারের নির্দেশে দেশব্যাপী শুরু হওয়া অপারেশন ক্রাকডাউনে সিএমপির যেসব অফিসার বিরোধী ভিন্ন মতের লোকজনের বাসা বাড়িতে গিয়ে গ্রেফতার অভিযানের নামে হামলা ভাঙ্গচুর সহ আটক করতে যাওয়া লোককে না পেয়ে তার পরিবারের অন্য সদস্যদের গ্রেফতার করে নিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আপোষ না হলে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো পুলিশ সদস্যদের বেশিরভাগ এখনো সিএমপির বিভিন্ন থানায় অবস্থান করছেন।
চলবে….
পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পেতে পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন।
Leave a Reply