আন্তর্জাতিক ডেস্ক; কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের নেতৃত্বে পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।
সেখানে তিনি জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যকে সমর্থন করেনা ভারত।
কেননা ঢাকা-দিল্লির সম্পর্কের মধ্যে হাসিনা এখন প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা সফর শেষে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব। এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য হিন্দু। এতে বলা হয়, মিশ্রি বলেছেন- বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক একক কোনো রাজনৈতিক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বাংলাদেশের জনগণের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেছে ভারত। তিনি আরও বলেন, নিজের বক্তব্য প্রচারের জন্য ‘ব্যক্তিগত যোগাযোগের যন্ত্র’ ব্যবহার করছেন হাসিনা। ভারত সরকার তাকে এমন কোনো প্ল্যাটফর্ম বা সুবিধা দেয়নি যা দিয়ে তিনি ভারতের মাটিতে বসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে সক্ষম হবেন।
মিশ্রি বলেন, এটি তৃতীয় কোনো দেশে হস্তক্ষেপ এড়ানো ভারতের অনুশীলনের ঐতিহ্যবাহী অংশ। ভারতে থেকে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ভিডিও বার্তা দিচ্ছেন হাসিনা। তার এই কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মিশ্রির বক্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছে সংবাদমাধ্যমটি। এ সপ্তাহের সোমবার ঢাকা সফরের সময় বাংলাদেশের সঙ্গে কি কথা হয়েছে তা সংসদীয় কমিটির বৈঠকে তুলে ধরে বিক্রম মিশ্রি বলেন, বাংলাদেশ সরকারকে তিনি জানিয়েছেন যে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক একক কোনো রাজনৈতিক দল বা নির্দিষ্ট সরকারের ওপর নির্ভর করে না। বরং জনগণকে অগ্রাধিকার দিয়েই বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে তারা।
বিক্রম মিশ্রি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে ভারতের উদ্বেগ তুলে ধরেন। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও যোগাযোগের বৃহত্তম অংশীদার ভারত, এ বিষয়টি উল্লেখ করে মিশ্রি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উভয় দেশ রেল যোগাযোগ, বাস সংযোগ, অভ্যন্তরীণ নৌপথ নির্মাণ করেছে। কমিটিকে তিনি এও জানিয়েছেন যে বাংলাদেশ ও ভারতের রেল যোগাযোগ বন্ধের বিষয়ে তিনি ঢাকাকে অবহিত করেছেন। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কথিত সহিংসতার বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানোর পাশাপাশি হাসিনা সরকারের পতনের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতার সঙ্গে সম্পর্কিত ৮৮ জনকে গ্রেপ্তার করায় অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মিশ্রি। সূত্র বলছে, মিশ্রি মনে করেন তার সফরের পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে।
বাংলাদেশ এবং ভারত উভয় পক্ষই নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে বলে জানিয়েছেন মিশ্রি। বিশেষ করে ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়কে উপজীব্য করে ভারতীয় গণমাধ্যমে অতিরঞ্জিত করে খবর প্রকাশ করার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য বাংলাদেশে ইসকন সন্ন্যাসীকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন, কিন্তু সূত্র জানিয়েছে এই বিষয়ে কোনো উত্তর দেয়নি মিশ্রি। তবে তিনি কমিটিকে জানিয়েছেন যে বাংলাদেশে গান্ধি সংস্কৃতি কেন্দ্রে হামলার বিষয়ে এখানের সরকারের কাছে দিল্লির উদ্বেগ অবহিত করা হয়েছে। মিশ্রি বলেন, ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশকে নিয়ে অতিরঞ্জিত খবরের বেশ কিছু ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে যেগুলো সমাধান করা প্রয়োজন।
পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পেতে পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন।
Leave a Reply