শরীফ হায়দার শিবলু: বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল বিভাগ আরএনবির সিআই আমান উল্লাহর বিরুদ্ধে দুর্নীতির সকল তথ্য প্রমান সহ জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ আসার পর অভিযুক্ত সিআই আমানকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রেল কতৃপক্ষকে আমানের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের উত্তর দিতে বলা হলেও অদৃশ্য শক্তির বলে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সকল তদন্ত রিপোর্ট ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্বকে মাটিচাপা দিয়ে দিলেন শোকজ নোটিস দেওয়া আরএনবি কমান্ড্যান্ট রেজোয়ানু রহমান!
শোকজের নোটিশের ব্যাপারে সংবাদ মাধ্যমের সাথে কথা বল্লেও শোকজ নোটিশের উত্তর দেওয়ার নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর অভিযুক্ত আরএনবির সিআই আমানের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ কি ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে জানার জন্য এই প্রতিবেদককের পক্ষ থেকে একাধিক বার ফোন করলেও কমান্ড্যান্ট ফোন রিসিভ করেনি!
২০১১ সালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনের পর ১৯৭৬ সালের বাংলাদেশ রেলওয়ের সাংবিধানিক আইনটিকে ২০১৬ সালে সংশোধন করে সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদে ৯ এর বিভিন্ন ধারায় বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কোন সদস্য অপরাধে জড়িত হলে যে শাস্তির বিধান রেখেছে সরকার সেই রাষ্ট্রীয় আইনকেও টাকার বিনিময়ে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ!
সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদের ৯ এর বিভিন্ন ধারায় নিরাপত্তা বাহিনীর কোন সদস্য অপরাধে অভিযুক্ত হলে ১৫২ অনুচ্ছেদের ৯ এর ১ ধারায় অভিযুক্ত সদস্যকে (ক) বরখাস্ত (খ) অপসারণ (গ) বাধ্যতামূলক অবসর (ঘ) পদাবনতি করা সহ অভিযোগ প্রমান হলে সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদের ৯ এর ২০ ধারায় তিন মাসের মধ্যে দেওয়ানী ও ফৌজদারি মামলা করার নির্দেশনা থাকলেও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ একই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যকে ২ বার দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তদন্তে প্রমান মিলার পরেও অদৃশ্য শক্তির আবরনে আমানের সকল অপরাধ মাটিচাপা দেয় সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ!
অন্যদিকে নিরাপত্তা বাহিনী যদি রেলওয়ের সম্পত্তি অবৈধভাবে কাউকে ব্যবহারের সুযোগ করে দেয় তাহলে সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদের ৯ এর ১৭ (ক) ধারায় অভিযুক্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যকে ৬ মাসের উর্ধ্বে সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান থাকলেও তদন্ত কমিটি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে সিআই আমান রেলওয়ের সম্পত্তি অবৈধভাবে ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়ার প্রমান পেয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে প্রতিবেদন দেওয়ার এক বছর অতিবাহিত হলেও রেলওয়ের আরএনবি কতৃপক্ষ কোন ধরনের ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আমানকে পুরস্কার হিসেবে অনিয়মের অভিযোগে বদলীর জায়গায় পুনরায় পোস্টিং দেয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বিভিন্ন আরএনবি সদস্যদের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ ও তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পরেও কোন ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর অন্য সদস্যরাও বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে!
তারই ধারাবাহিকতায় আমানের দায়িত্ব পাওয়া এরিয়ার মধ্যে বটতলী স্টেশন থেকে পাহাড়তলী স্টেশন পর্যন্ত। তার দায়িত্বরত এলাকা ঢাকা চট্টগ্রাম রেললাইনের উপর নিয়মিত চলে আসছে মাদক ব্যাবসা। আর এসব মাদক ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে দৈনিক মাদকের টাকা সংগ্রহ করে মার্সাল ইয়ার্ডে কর্মরত আরএনবি সদস্য হাবিলদার হাফিজ।
মার্সাল ইয়ার্ড থেকে রেলওয়ের বিভিন্ন সরঞ্জাম চুরির ঘটনায় চোর চক্রের সাথে হাবিলদার হাফিজ জড়িত থাকার কথা একাধিক নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এই প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন এবং হাবিলদার হাফিজের বিরুদ্ধে আরএনবির সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ এব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগও দেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল বিভাগের নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) সদস্যদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ কোন অভিযোগের সঠিক তদন্ত না করা এবং তদন্ত প্রতিবেদনের রিপোর্ট অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় কারনে কর্মস্থলে বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছে বেশীরভাগ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।
Leave a Reply