নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে শুধুমাত্র চাকরির বিষয় নিয়ে বৈষম্যবিরোধী বিপ্লব সংগঠিত হয়ে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলেও আওয়ামী লীগ আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অভিজ্ঞতার জাল সনদ ও জালিয়তি অভিজ্ঞতা সনদ দিয়ে সার্টিফিকেট অব কম্পিটেন্সি সনদ অর্জন করে তার ভিত্তিতে মৎস্য অধিদপ্তরের চাকরি হাতিয়ে নিয়ে মৎস্য অধিদপ্তরের ৫ কর্মকর্তা বহাল তবিয়তে আছে। এমনকি তাদের সাথে চাকরির জন্য আবেদন করা অন্য প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) এর ২৩/১২/২১ তারিখে একই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে মৎস্য অধিদপ্তরের সামুদ্রিক মৎস্য জরিপ ব্যবস্থাপনা ই্উনিট, আগ্রাবাদ চট্টগ্রামে বহাল তবিবিয়তে চাকরি করা সেই পাঁচ কর্ম কর্তকর্তার কারো নিয়োগ বিধিমতে প্রয়োজনীয় ও যথার্থ অভিজ্ঞতা নেই এবং তাদের অধিকাংশ অভিজ্ঞতার সনদ জাল।
তারা সুস্পষ্ট প্রমান দিতে পারবেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন। একই বিজ্ঞপ্তিমূলে পিএসসি তাদের অক্টোবর ২০২৩ মাসে এ পাঁচজনকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ১/১১/২০২৩ তারিখ হতে নিয়োগাদেশ প্রদান করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।সেহেতু অভিনব পদ্ধতিতে অভিজ্ঞতার জালিয়তির বিষয়ে মন্ত্রনালয়ের কিছু করার ছিল না।
অদৃশ্য কারণে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তাদের রাজনৈতিক প্রভাবে এহেন নিয়োগ জালিয়াতি, বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সনদ জালিয়াতি, দূর্নীতি ও অনিয়মের বিষয় ধামাচাপা দেয়।মৎস্য অধিদপ্তরাধীন চট্টগ্রামের সামুদ্রিক মৎস্য জরিপ ব্যবস্থাপনা ইউনিটের অভিযুক্ত ৫ কর্মকর্তা হলেন ৫ম গ্রেডভূক্ত স্কীপার পদে নোবেল দত্ত ও জয়দেব পাল, ৫ম গ্রেডভূক্ত প্রকৌশলী পদে মো. আবু সাদাত, ৬ষ্ঠ গ্রেডভূক্ত ২য় প্রকৌশলী মো: আসিফ রহমান এবং একই গ্রেডভূক্ত মেট মো: শফিউল আজম। এদের মধ্যে নোবেল দত্ত চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার এক আওয়ামী লীগের ক্যাডার ও স্থানীয় চেয়াম্যানের ভাতিজা বলে জানা গেছে। জয়দেব পাল একসময় নোবেলের অধিনস্হ ছিল বলে তাকে একটি অভিজ্ঞতার জাল সনদ দেয়।
এছাড়া আবু সাদাত, আসিফ রহমান ও শফিউল আজম ছাত্রলীগের কর্মী ও ক্যাডার ছিল বলে তাদের সাথে পরীক্ষায় বসা চাকরী প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে। তাদের অনেক জাল,ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদ ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে চাকুরীতে যোগদান করার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হলেও সংস্থাটি এখনও এ ৫ কর্মকর্তাকে হটাচ্ছেনা বলে অভিযোগ রয়েছে। । অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর তারিখের বিজ্ঞপ্তি নং ১৫১, ১৫২, ১৬৬ ও ১৬৭ মোতাবেক নিয়োগ প্রাপ্ত হন।
এমনকি জয়দেব পালসহ চারজনের নিয়োগে প্রায় ১ কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। এ চক্রের মূল হোতা হিসাবে নোবেল দত্ত ও আবু সাদাতকে চিহ্নিত করেছে অভিযোগকারীরা। তাদের সাথে অভিজ্ঞতার কাগজপত্র জাল জালিয়াতি ও জাল অভিজ্ঞতা দিয়ে সার্টিফিকেট অব কম্পটেন্সি সনদ অর্জনের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে। উক্ত নিয়োগে অভিজ্ঞতার কাগজপত্রে জাল জালিয়তির বিষয়টি স্বীকার করে নোবেল দত্ত সাংবাদিদের বলেন তাদের চাকরিচ্যুত করা যাবে না। কারণ তাদের সাথে ঊর্ধতন মহলের সাথে সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি চট্টগ্রামের এক সিনিয়র সাংবাদিককে এ বিষয়ে নিউজ না করতে হুমকিও দেন বলে অভিযোগ আছে।
অভিযুক্ত প্রকৌশলী আসিফ রহমান, আবু সাদাত , জয়দেব পাল ও শফিউল আজমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন সব কিছু তদন্ত করে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ভুয়া অভিজ্ঞতার কাগজপত্র দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কোন সমস্যা নেই বলেও জানান তারা।
এ বিষযে মেট মো. শফিউল আজম বলেন, চাকুরীতে আমরা অনেকের সাথে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পাশ করেছি। কাগজপত্র ও জালিয়তি অভিজ্ঞতার সনদের বিষয়ে আমি কিছু বলবনা।
অভিযুক্ত নোবেল দত্ত জানান, অভিযোগের বিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নেই, বেআইন ভাবে যদি কিছু হয়ে থাকে সেটা পরে দেখব, তার আগে কিছু বলা যাবে না।
এবিষয়ে সামুদ্রিক মৎস্য জরিপ ব্যবস্থাপনা ইউনিট, চট্টগ্রামের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মঈন উদ্দিন আহমদ মুক্ত আকাশ ২৪.কমকে বলেন,বিষয়টি পিএসসি নিয়োগ দিয়েছে, সেখানে আমার কিছু করার নেই।যদিও তাদের নিয়োগের পরে এনএসআই, ডিজিএফআইসহ অনেক সংস্থা বিষয়টি আমাকে তদন্ত করে দেখতে বলেছেন।
তদন্তের জন্য মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক উপযুক্ত তদন্ত কমিটি গঠন করা ব্যতীত আমার কিছু করার নেই।তাদের জাল অভিজ্ঞতার সনদের বিষয়ে কিছু জানা নেই বলে দাবি করে বলেন, দেশের এত বড় বড় অনিয়ম দুর্নীতি, ঐইদিকে নজর না দিয়ে ছোটখাট বিষয়ে নজর দিয়ে নিউজ করা মানে আমার দৃষ্টিতে সময় নষ্ট করা ছাড়া কিছু না। এক পর্যায়ে হুমকি দিয়ে বলেন, আপনি যাদের বিরুদ্ধে নিউজ করতেছেন তাদের চাপ সামাল দিতে পারবেন কি ? তারা খুবই শক্তিশালী। তারা সহজে আপনাকে ছাড়বেনা।
চলবে…..
পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পেতে পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন।
Leave a Reply